প্রথমেই, উত্তরটি হবে না।
মহাকাশে যাওয়ার প্রথম শর্ত হল স্পেস স্যুট ব্যবহার করা, যাতে করে গ্রাভিটি আর বায়ুচাপের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া যায়। অক্সিজেন সাপ্লাই আর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেরও ব্যাপার আছে। কিন্তু গ্রহটি যদি হয় "গ্যাস জায়ান্ট", তবে ভাবতে হবে অন্যভাবে!
আমরা জানি সৌরজগতে বর্তমানে স্বীকৃত গ্রহের সংখ্যা ৮টি (প্লুটোকে সম্ভবত আবার গ্রহের বিবেচনায় আনা হয়েছে), সে যাই হোক, সৌর জগতের গ্রহগুলো দুই ধরণের, একদল হল "রক-সলিড" বা পাথুরে গ্রহ, যেমন বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, আর আরেক দল হল "গ্যাস-জায়ান্ট" বা গ্যাসীয় গ্রহ।
পাথুরে গ্রহের মত গ্যাস জায়ান্টে কোন সার্ফেস বা মাটি নেই। আমরা পৃথিবী বা মঙ্গলে দাঁড়াতে পারি, কিন্তু বৃহস্পতি কিংবা শনিতে তা সম্ভব না। সূর্য থেকে দূরত্ব অনেক বেশী হওয়ায় গোল্ডিলোক্স সীমার পরের এই গ্রহগুলোয় তাপমাত্রা অত্যন্ত কম। খুবই ঠান্ডা এই গ্রহগুলোর মূল উপাদানই হল হিলিয়াম, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন। তাপমাত্রা কম হওয়ায় গ্যাস গুলো খুব ঘন অবস্থায় থাকে, এরকম, যেন ঠিক তরলও না, পুরোপুরি বায়বীয়ও না। তাই বৃহস্পতিতে যদি আপনি কখনো মহাকাশযানে পাড়ি দিয়ে ভ্রমনের ইচ্ছা রাখেন, তাহলে জেনে রাখুন, পুরু গ্যাসের তলে আপনাকে তলিয়ে যেতে হবে.... এই তলিয়ে যাওয়ার শেষ দেখার আগেই আপনি মারা যাবেন তীব্র ঠান্ডা আর খুবই শক্তিশালী মহাকর্ষ বলের কারণে। পৃথিবীতে আপনার ওজন যদি ১০০ পাউন্ড হয়, বৃহস্পতিতে হবে ২৫০ পাউন্ড! আপনার তলিয়ে যাওয়া মনে হবে "অসীম"!
তবে গ্যাস জায়ান্ট বলেই এটি ভাবার কোন কারণ নেই যে আপনি বৃহস্পতি কিংবা শনি গ্রহের কেন্দ্র ফুঁড়েই ভিতর দিয়ে বিনা বাঁধায় চলে যেতে পারবেন! প্ল্যানেট কোর বা কেন্দ্রের মহাকর্ষ বলই আপনাকে কেন্দ্রে পৌছার অনেক আগেই গ্রাস করবে। তাছাড়া গ্যাসের স্তর অতল গভীর মনে হলেও সম্ভবত এই গ্রহগুলোর কেন্দ্রের বাইরে বরফের আস্তরণ আছে। ইউরেনাস আর নেপচুনে এই বরফ অংশের ব্যাপ্তি গ্যাস জায়ান্ট হওয়া স্বত্ত্বেও অনেক বেশী, তাই এদেরকে আইস জায়ান্টও বলা হয়।
যেন তেন বরফ না, একেবারে জমাট বাঁধা নাইট্রোজেন আর মিথেন গ্যাস!!!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন